প্রথম খণ্ড
পাঠশালে অধ্যয়ণ
জয়
জয় রামকৃষ্ণ বাঞ্ছাকল্পতরু ।
জয় জয় ভগবান জগতের গুরু ॥
জয় জয় রামকৃষ্ণ ইষ্টগোষ্ঠীগণ ।
সবার চরণরেণু মাগে এ অধম ॥
বাল্যলীলা শ্রীপ্রভুর পূর্ণ মহিমায় ।
গাও মন স্মরি গুরু হৃদে যা যুয়ায় ॥ ১ ॥
বড়ই সুমিষ্ট কথা অমিয় পূরিত ।
বাল্যলীলা শুনে হয় মুখ সুপণ্ডিত ॥ ২ ॥
একদিন চাটুয্যে মহাশয় বলি ভাবে ।
গদা'য়ের হাতে খড়ি এবে দ্বিতে হবে ॥ ৩ ॥
ক্রমশঃ হ'তেছে বড় শুধু বুলে খেলে ।
সঙ্গে ল'য়ে যত সব তেলী মালী ছেলে ॥ ৪ ॥
মা বাপের গদাধর আদরের ধন ।
তাহাতে আবার তার কনিষ্ঠ নন্দন ॥ ৫ ॥
স্বভাবতঃ শিশুগণে পাঠে দেখে বাঘ ।
তাতে নাই গদা'য়ের কোন অনুরাগ ॥ ৬ ॥
কহিলে পড়ার কথা মন হয় ভারি ।
ভুলাইয়া বাপ-মার হাতে দিলা গড়ি ॥ ৭ ॥
যান শিশু গদাধর পাত্তাড়ি বগলে ।
যেখানে অনেক ছেলে লিখে পাঠশালে ॥ ৮ ॥
বিদ্যা অধ্যয়নে বড় নাহি হয় মন ।
দিবানিশি নানা রঙ্গ ল'য়ে সঙ্গিগণ ॥ ৯ ॥
শিশুগণ ফুল্লমন সুখসীমা নাই ।
ছুটি পেলে খেলে বুলে লইয়া গদাই ॥ ১০ ॥
বিদ্যাভাসে গদা'য়ের নাহি তত মন ।
যেমতে আত্মীয়বর্গে করে আকিঞ্চন ॥ ১১ ॥
শিক্ষাদাতা গুরুমহাশয় পাঠশালে ।
গদা'য়ে দেখেন যেন আপনার ছেলে ॥ ১২ ॥
কর্কশ প্রয়োগে পায় হৃদয়ে বেদনা ।
করিতে না পারিতেন তাঁহার তাড়না ॥ ১৩ ॥
গদা'য়ের পাঠশালে যাওয়া-আসা সার ।
লেখাপড়া বড় বেশী নাহি হয় তাঁর ॥ ১৪ ॥
বড়ই মঞ্জুর কথা শুন শুন মন ।
বহু ছেলে পেয়ে খেলা বাড়িল দ্বিগুণ ॥ ১৫ ॥
পাঠশালে যত ছেলে সবে ভালবাসে ।
ছুটি পেলে গদা'য়ের সঙ্গে ঘরে মিশে ॥ ১৬ ॥
আড়ালে গদাই ল'য়ে বালক সকল ।
সুন্দর করেন গান যাত্রার নকল ॥ ১৭ ॥
অপরে সাজান নিজে সাজেন গদাই ।
ঠিক অবিকল যাত্রা কোন ভেদ নাই ॥ ১৮ ॥
বাল্যাবধি শ্রুতিধর ছিলেন এমন ।
বারেক শুনিলে কভু নহে বিস্মরণ ॥ ১৯ ॥
খোল-করতাল-বাদ্য-শিঙ্গার নিনাদ ।
বদনে ফুটিত সব নাহি যায় বাদ ॥ ২০ ॥
যাত্রার সং দাড়ি যথা যাহা প্রয়োজন ।
গদাই হইতে হয় সব সরঞ্জাম ॥ ২১ ॥
একাকী গদাই করে যত সমুদয় ।
নেহারিলে হরবোলা মানে পরাজয় ॥ ২২ ॥
পাঠশালে যত ছেলে সব গেল মেতে ।
দিনে যায় পাঠশালা যাত্রা করে রাতে ॥ ২৩ ॥
গুরুমহাশয় শুনিলেন কানে কানে ।
গদাই করেন যাত্রা ল'য়ে ছাত্রগণে ॥ ২৪ ॥
পুত্রনির্বিশেষ তাঁর ছাত্র গদাধর ।
সোহাগ-পূর্ণিত কথা কতই আদর ॥ ২৫ ॥
একদিন পাঠশালে শিক্ষাগুরু বলে ।
শুনাও কেমন যাত্রা কর সবে মিলে ॥ ২৬ ॥
এমন নিপুণ তুমি পূর্বে জানি নাই ।
এত শুনি যাত্রারম্ভ করেন গদাই ॥ ২৭ ॥
আপনি করেন গান মুখে বাদ্য বাজে ।
দুই হাতে যেন তাল পদদ্বয় নাচে ॥ ২৮ ॥
গীত
বাদ্ম-নৃত্য তাঁর অতি পরিপাটি ।
মাঝে মাঝে সং দেওয়া কিছু নাহি ত্রুটি ॥ ২৯ ॥
হেসে
হেসে মরে গুরু সহ ছাত্রগণ ।
কতই আনন্দ তাঁর নাহি নিরূপণ ॥ ৩০ ॥
শুনি হাসি-রোল
যারা থাকিত নিকটে ।
তেয়াগিয়া কার্যকর্ম পাঠশালে জুটে ॥ ৩১ ॥
পাঠশালা হৈল ঠিক
রঙ্গশালা-মত ।
নিত্য প্রায় গদাা'য়ের যাত্রা তথা হ'ত ॥ ৩২ ॥
গুরু-ছাত্রগণ-মধ্যে
অন্য কথা নাই ।
কতক্ষণে আসিবেন লিখিতে গদাই ॥ ৩৩ ॥
সকলেই উদ্গ্রীব গদা'য়ের তরে ।
হেন শুরু-ছাত্র বন্দে অধম পামরে ॥ ৩৪ ॥
গদাই মুরতি চিন্তা করে যেই জন ।
ধরি শিরে
তা সবার যুগলচরণ ॥ ৩৫ ॥
কঠোর তপস্যা করি যে ধন না মিলে ।
কামারপুকুরবাসী তাই ল'য়ে
খেলে ॥ ৩৬ ॥
গোপপাড়া আগাগোড়া কামারপুকুরে ।
তা সবারে নরবুদ্ধি হীনবুদ্ধি করে ॥ ৩৭ ॥
কি
বুঝ কি বুঝ মন অন্য কথা নয় ।
শিশুরূপী ভগবান সঙ্গে রঙ্গ হয় ॥ ৩৮ ॥
ভাবিয়া দেখিতে
গেলে হৃদয় মাঝারে ।
শরীর নিশ্চল কথা মুখে নাহি সরে ॥ ৩৯ ॥
কি হেতু শরীর স্থির
বুঝে দেখ মন ।
কেনই বা নাহি হয় বাক্য নিঃসরণ ॥ ৪০ ॥
কথার এ কথা নয় ভাব আঁখি মুদে ।
কহিতে নারিনু দুঃখ রয়ে গেল হৃবে ॥ ৪১ ॥
অদ্ভুত তাজ্জব অতি বিস্ময় ব্যাপার ।
জয়
শিশুরূপী প্রভু ভবকর্ণধার ॥ ৪২ ॥
জয় জয় চন্দ্রমণি জননী প্রভুর ।
জয় পিতা
ক্ষুদিরাম চাটুয্যে ঠাকুর ॥ ৪৩ ॥
শ্রীরামকুমার জয় জ্যেষ্ঠ সহোদর ।
জয় জয় মেজভাই নাম রামেশ্বর ॥ ৪৪ ॥
জয় ধনী কামারিনী পূজিত চরণ ।
জয় গদা'য়ের শিশু-সহচরগণ ॥ ৪৫ ॥
জয় জয় যত প্রতিবাসী শ্রীপ্রভুর ।
জয় গরীয়সী ভূমি-কামারপুকুর ॥ ৪৬ ॥
জয় জয় গ্রামবাসী যত নরনারী ।
জয় জয় বালক-বালিকা আদি করি ॥ ৪৭ ॥
জয় জয় পশু-পাখী গুল্ম লতাগণ ।
জয় পুণ্যভূমি রজ কলুষনাশন ॥ ৪৮ ॥
গুরুমহাশয় করে বিশেষ যতন ।
গদাই শিখেন যাতে লিখন-পঠন ॥ ৪৯ ॥
বিদ্যায় উদাস বড় না হয় উন্নতি ।
কিছুই না কন, তাঁর দেখিয়া প্রকৃতি ॥ ৫০ ॥
কাঠাকে পর্যন্ত শেষ, লোকমুখে শুনি ।
সরল বানান ক্ষম আমি ভাল জানি ॥ ৫১ ॥
তেরিজ পর্যন্ত অঙ্কে, যারে বলে যোগ ।
আর নাহি পারিলেন শিখিতে বিয়োগ ॥ ৫২ ॥
স্বভাবতঃ যোগে নন তাই যোগ হ'ল ।
অধম বিয়োগ, তাহে বৃদ্ধি বেঁকে গেল ॥ ৫৩ ॥
পূর্ণ থেকে পূর্ণ গেলে পূর্ণ থাকে যাঁর ।
কেমনে বিয়োগে বুদ্ধি আসিবে তাঁহার ॥ ৫৪ ॥
এ বড় সুগূঢ় অঙ্ক, অঙ্ক-শাস্ত্রে নাই ।
বুঝিতে এ সব তত্ত্ব সৎবুদ্ধি চাই ॥ ৫৫ ॥
বাদ দিলে পূর্ণ-ব্রহ্ম, পূর্ণ-ব্রহ্ম হ'তে ।
তথাপিও সেই পূর্ণ ব্রহ্ম থাকে হাতে ॥ ৫৬ ॥
মহাব্যয়ে পুষ্টি-সৃষ্টি বিশ্ব চরাচর ।
জমায় বাকিতে তবু একরূপ দর ॥ ৫৭ ॥
জমারূপে পূর্ণ-ব্রহ্ম বিভু সনাতন ।
ব্যয়রূপে বিরাট মুরতি অগণন ॥ ৫৮ ॥
বাকিতলে তাই মিলে যেমন জমায় ।
সেহেতু বিয়োগবৃদ্ধি না আসে মাথায় ॥ ৫৯ ॥
লোকে না বুঝিতে পারে এতেক খবর ।
বুঝে মাত্র শিখিতে না পারে গদাধর ॥ ৬০ ॥
হিসাব-নিকাশে বৃদ্ধি আদতেই নাই ।
চোখে দিয়া বুলা, খেলা খেলেন গদাই ॥ ৬১ ॥
অঙ্ক দিলে, তার ফেলে, প্রভু গুণধাম ।
তালপাতে লিখিতেন ঠাকুরের নাম ॥ ৬২ ॥
পাড়াগাঁয় পাঠশালে প্রচলিত রীতি ।
প্রহলাদ-চরিত্র আর দাতাকর্ণ-পুঁথি ॥ ৬৩ ॥
সরলবানানযুক্ত বাক্য সমুদয় ।
পড়িতে পড়িতে হয় বর্ণ-পরিচয় ॥ ৬৪ ॥
বর্ণপরিচয় হেতু গুরু পাঠশালে ।
প্রহলাদ-চরিত্র পুঁথি সকালে সকালে ॥ ৬৫ ॥
নিত্য নিত্য পড়াতেন শিশু গদাধরে ।
সমস্ত মুখস্থ তাঁর বার বার
প'ড়ে ॥ ৬৬ ॥
প্রহলাদের অনুরাগ ভগবান প্রতি ।
পড়িতে হইত তাঁর বড়ই পিরীতি ॥ ৬৭ ॥
সেই
হেতু পুঁথিপাঠ হ'ত অন্য স্থানে ।
মধু যুগী জেতে তাঁতী তাহার ভবনে ॥ ৬৮ ॥
পাঠশালে
ছুটি হ'লে শিশু গদাধর ।
পড়েন প্রহলাদ-কথা করিয়া আদর ॥ ৬৯ ॥
সুন্দর আখ্যান মন শুন
সাবধানে ।
শিশু গদাধর পুঁথি পড়েন কেমনে ॥ ৭০ ॥
অতি অনুরাগে পুঁথি হয় একদিন ।
কত
লোক নর-নারী যুবক-প্রাচীন ॥ ৭১ ॥
চারি ধারে ঘেরে তাঁরে শুনে ব'সে ব'সে ।
গদাা'য়ের পুঁথিপাঠ পরম উল্লাসে ॥ ৭২ ॥
জন-মন-আকর্ষণী অতি মিষ্ট স্বর ।
তাহাতে
সবার প্রিয় শিশু গদাধর ॥ ৭৩ ॥
অগোচরে শুনে এক হনু কুতুহলে ।
নিকটে আমের গাছে ব'সে
তার ডালে ॥ ৭৪ ॥
শ্রবণে বিভোর প্রাণ ভাবের উচ্ছ্বাসে ।
গাছ হ'তে হনুমান নামে
অবশেষে ॥ ৭৫ ॥
নাহি ত্রাস মহোল্লাস শুনেছি যেমন ।
নিকটে বসিল ধরি শিশুর চরণ ॥ ৭৬ ॥
যতক্ষণ পাঠসাঙ্গ নাহি হয় তাঁর ।
হনুমান শুনে পুঁথি আনন্দ অপার ॥ ৭৭ ॥
পাঠান্তে উঠায়ে পুঁথি শিশু গদাধরে ।
পরশ করিয়া দিলা হনু-শিরোপরে ॥ ৭৮ ॥
শ্রীপদে প্রণমি হনুমান কর-পুটে ।
পুনরায় পূর্বেকার আমগাছে উঠে ॥ ৭৯ ॥
কেবা এই পশুরূপী ভক্ত হনুমান ।
কি বুঝি, চরণে তাঁর অসংখ্য প্রণাম ॥ ৮০ ॥
যত কিছু বিষ্ণুমান কামারপুকুরে ।
স্থাবর জঙ্গম কিবা জীবের আকারে ॥ ৮১ ॥
প্রভু অবতারে তাঁরা দেব-দেবী যত ।
প্রভুর আজ্ঞায় সব সঙ্গে সমাগত ॥ ৮২ ॥
দেখ দেখ সাবধান সাবধান মন ।
প্রাণাস্তেও অন্য বৃদ্ধি কর না কখন ॥ ৮৩ ॥
ভগবান তব লীলা সুমূর্খ পামরে ।
ভক্তিহীন বন্ধ-আঁখি কি গাইতে পারে ॥ ৮৪ ॥
ঘটেতে থাকিত বাধ কিছু ভক্তিধন ।
গাইতাম বাল্য-খেলা মনের মতন ॥ ৮৫ ॥
বড়ই মধুর প্রভু-বাল্য-খেলা-কথা ।
গাইব যেমন প্রভু পেয়েছি ক্ষমতা ॥ ৮৬ ॥
সর্বজ্ঞ শ্রীপ্রভু তুমি সব তত্ত্ব জ্ঞাত ।
ধরি নররূপ খেলিতেছ নর-মত ॥ ৮৭ ॥
নর-মত রূপে বটে, কাজে কিন্তু নয় ।
অমানুষী অপরূপ খেলা সমুদায় ॥ ৮৮ ॥
নরবুদ্ধিগম্য প্রভু নহ কোন কালে ।
কি করিয়া বুঝা যায় এ বুদ্ধির বলে ॥ ৮৯ ॥
সত্যই দিয়াছ দুটি আঁখি জ্যোতিষ্মান ।
বিষম পরদা সম্মুখেতে লম্বমান ॥ ৯০ ॥
পাষাণে রচিত এই পরদা বিশেষ ।
ভেদ করি চালি দৃষ্টি নাহি শক্তি-লেশ ॥ ৯১ ॥
কেমনে দেখিব প্রভু তব কারবার ।
হীনদৃষ্টি ব্রহ্মা শিব, আমি কোন ছার ॥ ৯২ ॥
অবিদ্যা-মোহিত চিত মলিন মুকুর ।
কৃপা কর শিশুরূপী দয়াল ঠাকুর ॥ ৯৩ ॥
এখন কেবল বয়ঃ সাতের উপর ।
জনক তাঁহার ত্যজিলেন কলেবর ॥ ৯৪ ॥
পৈতার সময় প্রায় দেখিয়া আগত ।
ভ্রাতৃগণ শুভদিন করে নির্ধারিত ॥ ৯৫ ॥
ব্রাহ্মণ ব্যতীত ভিক্ষা অন্য কোন জাতি ।
না দেওয়ার সেই বংশে কুলোচিত রীতি ॥ ৯৬ ॥
সেই হেতু দ্বিজকন্যা গ্রামে যতজন ।
ভিক্ষা দিতে গদাধরে করে আকিঞ্চন ॥ ৯৭ ॥
হেথায়
গদাই কন ধনী কামারিনী ।
ভিক্ষা যদি দেয় তবে ভিক্ষা লব আমি ॥ ৯৮ ॥
কখন না লব
ভিক্ষা অপরের হাতে ।
না হয় না হবে পৈতা ক্ষতি নাই তাতে ॥ ৯৯ ॥
একি কথা গদাধর, কহে
ভ্রাতাগণ ।
কি লাগিয়া কুল প্রথা কর অতিক্রম ॥ ১০০ ॥
শূদ্রদান কখন গ্রহণ নাই কুলে ।
জানিয়া শুনিয়া কথা কেমনে বলিলে ॥ ১০১ ॥
কোন হেতু না শুনেন শিশু গদাধর ।
ধনী হবে
ভিক্ষামাতা একই রগড় ॥ ১০২ ॥
এত বলি মুখ ভারি ঘরে খিল দিরা ।
রহিলেন গদাধর আবদ্ধ
হইয়া ॥ ১০৩ ॥
ক্ষুধার সময় যায় না খুলেন দ্বার ।
নরনারী আসে যত শুনে সমাচার ॥ ১০৪ ॥
যে
গদা'য়ে খাওয়াইয়া মহা সুখ মনে ।
সে গদাই অনাহারে আবদ্ধ ভবনে ॥ ১০৫ ॥
কেমনে গ্রামের
লোক চিত্তে রহে স্থির ।
বার্তা পেয়ে তাই ধেয়ে সকলে হাজির ॥ ১০৬ ॥
নাহিক উত্তর,
তাঁরে যে যত বুঝায় ।
যেন নাহি যায় কান কাহার কথায় ॥ ১০৭ ॥
যবে ভাই রামেশ্বর যাইয়া
আপনি ।
বলিলেন দিবে ভিক্ষা ধনী কামারিনী ॥ ১০৮ ॥
না হয় হইবে নষ্ট বংশকুলাচার ।
শুনি
বাণী তবে মুক্ত করিলেন দ্বার ॥ ১০৯ ॥
মরি কি সৌভাগ্য তব ধনী কামারিনী ।
ভিক্ষা
দিলে তাঁয়, বিশ্বে ভিক্ষা দেন যিনি ॥ ১১০ ॥
ত্রাতা, পাতা, তারক, পালক সবাকার ।
শিবময়, ইচ্ছাময়, ভবকর্ণধার ॥ ১১১ ॥
যদ্যপি থাকিতে তুমি অদ্যাপি বাঁচিয়া ।
ভাগ্য
মানিতাম পদ মাথার ধরিয়া ॥ ১১২ ॥
যে যে স্থানে পাতিয়াছ চরণ দু'খানি ।
সেখানের রেণু পাওয়া মহাভাগ্য গণি ॥ ১১৩ ॥
কার
অবতার তুমি কিছু শুনি নাই ।
বৎস-হারা গাভী যেবা বিহনে গদাই ॥ ১১৪ ॥
কি সাধ্য মহিমা গাই কি আছে শকতি ।
এতেক বাৎসল্য যাঁর ঘটে বলবতী ॥ ১১৫ ॥
মহা ভাগ্যবতী ধরাতলে
বিদ্যমান ।
বুঝি না জানি না কেবা তোমার সমান ॥ ১১৬ ॥
ক'ড়ে রাঁড়ী অপুত্রক ধনী কামারিনী ।
না বিইয়ে হৈল এবে রামের জননী ॥ ১১৭ ॥
ভক্তপ্রিয় প্রভুদেব ভক্তে তাঁর প্রাণ ।
ভক্তি জোরে, ভক্তে করে, তাঁহারে সন্তান ॥ ১১৮ ॥
অপার করুণা তাঁর ভকতের প্রতি ।
শুনহ অপূর্ব কথা রামকৃষ্ণ-পুঁথি ॥ ১১৯ ॥
লীলা-গীতি শ্রীপ্রভুর অমিয়-পূরিত ।
শ্রবণ কীর্তনে পূত চিত্ত সুনিশ্চিত ॥ ১২০ ॥